ইসলামে মেয়েদের পর্দা

 অনেক কষ্ট করে আমি একটা খামার তৈরি করলাম। শত শত মুরগী আনলাম সেখানে। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অনেক টাকা খরচ করে কাঁটাতার দিয়ে সুন্দর করে ঘড় বানিয়ে দিলাম। বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য ছাদ বানিয়ে দিলাম। সবকিছু ভালোই চলছিলো। কিন্তু কিছুদিন পরেই ঝামেলাটা শুরু হল। এলাকায় কিছু শেয়ালের আগমন হয়। তারপর এটা ওটা ধরে খাওয়া শুরু করে। আমার খামারটার কথাও ওদের কাছে আর গোপন থাকলো না। তার পরের রাত থেকেই আমার খামারের আশেপাশে ওদের আনাগোনা শুরু হয়ে গেল। কিন্তু ধরতে তো পারে না। নিরাপত্তা। কী করা যায়? শেয়ালেরা সবাই ভাবতে বসলো। অনেক চিন্তাভাবনার পর ওরা বিশাল একটা পরিকল্পনা করে ফেললো। কয়েকজন শেয়াল মুরগীর খামারের কাছে গিয়ে মুরগীর মুখে ফিস ফিস করে বলে, "তোমাদের মালিক তো অনেক অত্যাচারী। এই সামান্য জায়গায় তোমাদের বন্দি করে রাখে সবসময়। আর আমাদের দেখো... কতো স্বাধীন আমরা। যেখানে ইচ্ছা ঘোরাফেরা করতে পারি, বাঁধা দেওয়ার মতো কেউ নাই। তোমাদেরও কী ইচ্ছা হয় না.. আমাদের মতো স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে?"

মুরগী চিন্তা করে, শেয়াল ভায়ার কোথা তো ঠিকই আছে। বাইরে কতো বিশাল এই পৃথিবী। অথচ আমাদের মালিক আমাদেরকে এই ছোট্ট জায়গায় আটকে রেখেছে। এটা অবশ্যই মুরগীদের প্রতি অবিচার। মুরগীর চোখ খুলে গেছে আজ। এই কথাটা পুরো খামারে ছড়িয়ে গেল। প্রতিটা মুরগী গরম হয়ে উঠল। সামনেই একটা গনঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে ফেলবে তারা। এই খাঁচার ভেতরে থাকবে না আর। আন্দোলন শুরু হল তুমুল বেগে। শুরু হল অনশন। একসময় মুরগীর চাপের মুখে পড়ে তাদের মুক্ত করে দিতে বাধ্য হই। আজ থেকে তোমরা সবাই স্বাধীন। মুরগীর চোখে মুখে আনন্দের ছাপ। গাছের আড়াল থেকে শেয়ালগুলো সব দেখছিলো। জিহ্বা দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। আজকে রাতে মহাভোজ হবে তাদের। তারপরের ঘটনা আর বলতে হবে না।

শেয়াল কখনোই একটা মুরগীর ভালো চাইবে না। যদি চায়, তাহলে বুঝতে হবে এর মধ্যে অবশ্যই কোন ঝামেলা আছে। তুমি যদি মুসলিম মেয়ে হয়ে থাকো। তোমাকে পর্দা করতে হবে। এটা তোমার একটা নিরাপত্তা। পশ্চিমার ফলোয়াররা তোমাকে বলবে, পর্দা তোমাকে বন্ধি করেছে। তোমার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। তখন তুমি মনে করবে, আসলেই তো! সবাই কতো স্বাধীন। তাহলে আমরা মুসলিম মেয়েরা কেন পরাধীন হয়ে থাকবো? তখন তুমি স্বাধীনতা নামক একটা পশ্চিমা ফাঁদে আটকা পড়ে যাবে। সেই মুরগীদের মতো, যারা স্বাধীন হওয়ার আশা নিয়ে ঘড় থেকে বের হলো ঠিকই। কিন্তু তারপর গেল শেয়ালের পেটে।

মুসলীম মেয়েরা পর্দা করে চলাফেরা করে। পশ্চিমা এজেন্ডদের চোখ তখন জ্বলবে। তারা বলবে, ইসলাম মেয়েদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, তাদের নিরাপত্তা নেই, স্বাধীনতা নেই। আরো কত কী?

আমি পশ্চিমাদের বলি, তোমার দেশের মেয়েদের স্বাধীনতা কতটুকু? তুমি যে মুসলিম মেয়েদের স্বাধীনতার কথা বলছো, তোমার দেশের মেয়েদের স্বাধীনতা কতখানি? তোমার দেশের মেয়েদের মানুষ বলেই গন্য করা হয় না। শুধুমাত্র আমেরিকাতেই প্রতি বছর প্রায় ১ লাখের মতো নারী পাচারের ঘটনা ঘটে। যারা পরবর্তিতে বেশিরভাগই প/র্ণ ইন্ডাস্ট্রিতে বা পতি/তালয়ে কাজ করে। এখানে এই মেয়েগুলোর স্বাধীনতা কোথায়? চাইলেই কি এই মেয়েগুলো তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবে? পতি/তালয় ছাড়া অন্য কোন কর্মক্ষেত্রে তারা কাজ করতে পারবে? তোমাদের দেশে ডিভোর্স এর পরিমান এতো বেশি কেন? কারণ, প্রয়োজনের পর সেই নারীর দাম তোমাদের কাছে ফুরিয়ে যায়। একজনের সাথে কিছুদিন সময় কাঁটাও। তারপর ওইটার ওপর বিরক্ত হয়ে অন্যটা ধরো। এভাবেই তোমাদের দেশে নারীদের ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। এদেশের মুসলিম নারীদের দাম কখনো ফুরায় না।

তাই আমাদের দেশের নারীদের বলি। অন্যের কথায় হুট করেই বিশ্বাস করতে যেও না। ভেবে দেখো, তার কথাটা কতটা যুক্তিসংগত। ইসলাম কখনোই নারীকে বঞ্চিত করে না। একসময় মেয়েদেরকে জীবন্ত কবর দেওয়া হত। মেয়ে সন্তান জন্ম হলে বাবার মুখ কালো হয়ে যেত। ইসলাম সেইসব মেয়েদের সম্মানের আসনে বসিয়েছে।

তাই আমার মুসলিম বোনদের বলছি, পর্দা করবে। বোরখা পড়ে কেউ কখনোই ছোট হয় না। কোন গেঞ্জি পড়া মেয়ে যদি তোমাকে কটু কথা বা গাইয়া মেয়ে বলতে আসে। ডিপ্রেশনে না গিয়ে একবার ভাবো। অই মেয়ের ৮০ টাকার গেঞ্জির চাইতে তোমার বোরখার মুল্য ১০০ গুন বেশি। আগে তোমার লেভেলে আসতে হবে।

লেখাঃ মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল

Comments

Popular Posts