আমাদের বাচ্চাদের ফোনে আসক্তি
[লেখাটিতে নানান ধরনের #১৮+ আলোচনা করা হয়েছে। তবে বাচ্চারাও এটা পড়তে পারবে। কারণ, ১৮+ লেখা দেখলে বাচ্চারা ওইটা আরো ভালোমতো মনোযোগ দিয়ে পড়ে। তাই নিষেধ দিয়েও লাভ নেই।]
এখনকার ছোট্ট বাচ্চাদের হাতে স্মার্টফোন। বাবা মায়েরা ছেলেদের একাকিত্ব দুর করার জন্য নিজেরাই তাদের ছেলেমেয়েদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দিচ্ছেন। এর ফলাফলটা যে কতটা ভয়ানক হতে পারে সেটা হয়তো কারো মতে কল্পনাও করতে কষ্ট হবে।
এর পেছনে একটা কারণ হলো ওদের এসবের উপর জ্ঞান কম। ওরা জানে না যে আসক্তি কি জিনিস। কতটুকু মোবাইল দেখলে ওদের জন্য ভালো হবে, কতটুকু দেখলে সেটা ওদের জন্য ক্ষতিকর, সেই জ্ঞান ওদের নেই। এখনকার বাবা মায়েদেরও। তাই তোমাদের সাথে আমাকে রাখতে দিও দয়া করে।
আজকে কিছু জিনিস তুলে ধরার চেষ্টা করবো, যা আপনার কাছে অশ্লীল মনে হতে পারে, তবে বলতে হচ্ছে। বাবা মায়েরা এই বিষয়ে পুরোই উদাসিন। কিছু কিছু বাবা মায়েরা তাদের ছেলেমেয়েদের সাথে এসব কথা বলতে লজ্জা পান। যার কারনে ওরা এসব বিষয়ে কোন সঠিক ধারণা পায় না। যেটা পায়, সেটা মিথ্যা, ভুল।
এখনকার বেশিরভাগ বাচ্চাদের ফোন থাকুক বা না থাকুক, ওরা ক্লাস থ্রি-ফোর এ পড়ার সময় পর্ণ ভিডিও সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যায়। হয়তো ওদের বন্ধুর মাধ্যমে বা সিনিয়র ভাই বা সহপাঠির মাধ্যমে ওরা পর্ণ ভিডিওর হাতেখড়ি নেয়।
সেখানে ওরা দেখতে পায় একটা পুরুষ একটা মেয়েকে নির্যাতন করে যাচ্ছে। ও মনে করে এটাই হয়তো সত্যি এবং সঠিক। দেশের ছেলেমেয়েদের সেক্স সর্ম্পকে প্রায় ৮০% ধারণা আসে পর্ন ভিডিও থেকে। এর আগে ওরা সেক্স কি সেটা জানতোই না।
তারপর বন্ধুদের সাথে থেকে শিখে ফেলে মাস্টারবেশন। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে এই মাস্টারবেশনে আসক্ত হয়ে যায় তারা। এমনকি ছোট বয়সে ওদের মাস্টারবেশন সম্পর্কে জ্ঞান নেই বললেই চলে। ওরা যাস্ট এটা করে মজা পায়, তাই করে। এর বেশি কিছু ওরা জানে না। ইসলামে এটা হারাম, বা এটা করার পরে গোছল ফরজ হয়, কোন ধারণাই ওদের থাকে না।
নিজের ফোনেই সে পর্ন দেখবে এমনটা না। অন্যের ফোনের দ্বারাও সে এসব দেখতে পারে।
যাক এতটুকু সমস্যা মেনে নিতে হবে। এখানে আসলে বাবা মায়েদেরও কোন হাত থাকে না। বাবা মায়েরা এখানে কেবল বাচ্চাদের বুঝাতে পারেন। তাদের বলতে পারেন, যে এটা খারাপ। অতিরিক্ত মাস্টারবেশনের ফলে যৌন সমস্যা হতে পারে। কি কি সমস্যা হতে পারে তা বলা যেতে পারে। এখন অনেকেই বলবে, এতো ছোট বাচ্চাকে এসব বলা কি ঠিক হবে? আপনি খোজ নিয়ে দেখেন ও আপনার ধারণার চাইতেও বড় হয়ে গেছে। ও কতটা বড় হয়েছে আপনি নিজেও কল্পনা করতে পারবেন না। কারণ এখন স্কুলে এসব নিয়ে আলোচনা হয়। ওদের বন্ধুরা পর্ন দেখে। আপনার ছেলেও যে ওখানে একবারের জন্য উকি দেয় নি এর নিশ্চয়তা কতটুকু?
এখন কোনভাবে যদি কাঁটা ঘায়ে একটু নুনের ছিটা দেওয়া যায়, তাহলে সমস্যাটা আরো কতগুন বাড়বে সেটা অনুমান করাটাও কঠিন। ওরা যদি আগে থেকেই পর্ন দেখে থাকে, এবং নিজের হাতে যদি ওরা ফোন পায়, তাহলে ওদেরকে আর আটকাবার মতো কে আছে? কেউ থাকবে না তখন তাকে ওই হারাম এবং ভুল বিনোদন থেকে আটকাতে। আপনি হয়তো জানবেনই না যে আপনার কোমলমতি শিশুটা এরকম হিংস্র হয়ে গেছে। তাই আমার অনুরোধ থাকবে, আপনার বাচ্চার হাতে ফোন দেওয়ার আগে ১০ বার ভাবুন। যাকে আপনি ফোন হাতে দিচ্ছেন, সে কি ফোন পাওয়া যোগ্য?
এই আসক্তির সাথে যদি যুক্ত হয় সোসাল মিডিয়া, তাহলে খেলাটা আরো জমে যায়। ওদের সাথে যুক্ত হয় ওদের মেয়ে বন্ধুরা। কিছু কিছু ছেলেমেয়ে এতোটা নিচে নেমেছে যে ওরা ওদের মেয়ে ক্লাসমেটদের মেসেন্জারেও নানান অশ্লীল ভিডিও পাঠায়। ওই সময় মেয়েরাও ওসবে আসক্ত হয়ে যায়। ওরা তখন পুরো জগৎটাকে ভুলভাবে শেখে। সেক্স মানে তখন ওরা ছেলেদের আধিপত্য আর মেয়েদের অপমানের বস্তু মনে করে। মেয়েরাও এটা নিয়ে নিজেদের পরিবারের কারো সাথে কথা বলতে সাহস পায় না। আপনার আমার চাইতেও ওদের শেখার ক্ষমতা বেশি। ওরা সেক্স দেখে কৃত্তিম যৌনতা শেখে। ওরা জানে না যে ওগুলো সব লাইট ক্যামেরা আ্যকশন। ওদের পেছনের আসল সত্য ওরা জানে না। ওরা জানে না ১৫ মিনিটের একটা পর্ন ভিডিওর সুটিং করতে এসব অভিনেতাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেটে অভিনয় করতে হয়। ভিডিওতে দেখানো জিনিসগুলো যে একেকটা অভিনয় সেটা ওরা বোঝে না। যার কারণে পর্ন ভিডিও দেখে ওরা সেক্স সম্পর্কে যে ধারণাটা পায়, সেটা পুরোপুরি মিথ্যা। বাস্তবের সেক্স এরকম হয় না। সেখানে ভালোবাসা লাগে। ওরা ওটা বুঝতে চায় না। এসব পর্ন দেখতে দেখতে সে একদিন নারীকে নিজেদের যৌন দাসী হিসাবে দেখবে। অথচ পৃথিবীটা দুজনেরই, ওরা এটা বুঝবে না।
অনেকেই বলতে পারেন, লেখকের দেখি এসব নিয়ে অনেক জ্ঞান। সে বাচ্চাদের এসব গোপন কিছু জানলো কিভাবে? তার আগে বলতে চাই। প্রথমত আমরাও ছাত্র ছিলাম। এবং তার পরে নিজে আরো কিছু জিনিস খেয়াল করেছি। একটা ঘটনা বলা যাক। আমাদের প্রতিবেশি এক মহিলা তার ফোনের একটা সমস্যা নিয়ে আমার কাছে এসেছিলো। ভদ্রমহিলা ফোন সম্পর্কে অতো কিছু জানতো না। আমি ফোনটা ঠিক করার কাজ করতে গিয়ে ব্রাউজার হিস্টি চালু করার পর যা দেখলাম তা দেখে তো রীতিমত আমি অবাক। ব্রাউজার ভতি পর্ন সাইটের হিস্টি। কে দেখেছে এগুলা? মহিলার ঘড়ে চতুর্থ শ্রেণির দুইটা বাচ্চা আছে। নিশ্চই ওরা দুই ভাই মিলেই দেখে এসব। অথচ তাদের এখনো খাবার খিলিয়ে দিতে হয়। ওদের মা হয়তো মনে করে, ওরা কোমলমতী শিশু। কিন্তু বাস্তবতা যে কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে, ওদের মা সেটা জানেই না। এই বাচ্চারা হস্তমৈথুনে আসক্ত হবে শতভাগ সম্ভাবনা আছে।
আপনার ছেলেদের প্রয়োজন ছাড়া কখনোই হাতে ফোন দিবেন না। বাচ্চার টাইম পাস করার জন্য ফোন হাতে দেওয়া একটা বাজে রুলস। টাইম পাস করার জন্য ওকে বই দিন। খাতা পেন্সিল দিন। ব্লকস দিতে পারেন।
Comments
Post a Comment